কোনো ব্যাংককেই আর দেউলিয়া হতে দেয়া হচ্ছে না: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫ ৩:১০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বর্তমান সরকার, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দুর্নীতির শিকার হওয়া ব্যাংকগুলোর রক্ষা করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তবে এই ব্যাংকগুলোকে বাঁচানো বেশ কঠিন। এসব ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে সরকারকে প্রচুর টাকা ছাপাতে হচ্ছে। সোমবার, উন্নয়ন বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি)-এর আয়োজিত এক উন্নয়ন সংলাপ ও ইফতার মাহফিলে এসব মন্তব্য করেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা কমিশনের বিভিন্ন বিভাগের সদস্য ও সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ডিজেএফবি সভাপতি হামিদুজ্জামান সংলাপের সভাপতিত্ব করেন এবং সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা মুহিব সঞ্চালনা করেন।
টাকা ছাপানোর বিষয়টি উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে টাকা পাচারের ঘটনা ঘটছে না, এবং ব্যাংকগুলো থেকে টাকা লোপাটও হচ্ছে না। তবে, তিনি বলেন, এখন প্রশ্ন হতে পারে, তাহলে অর্থনীতি আরও কেন শক্তিশালী হচ্ছে না- এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোকে রক্ষা করা হচ্ছে, তাদের দেউলিয়া হওয়ার পথে যাওয়া আর আটকানো যাচ্ছে। এর ফলে, অনেক টাকা ছাপাতে হচ্ছে এবং কিছু ব্যাংককে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এটা অবশ্যই একটি কঠিন কাজ, তবে ব্যাংকিং খাতের অবস্থা রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে অর্থনীতির পরিস্থিতি তুলে ধরে উপদেষ্টা জানান, বিভিন্ন অর্থনৈতিক সূচক একে একে খারাপ হতে থাকায় পূর্বের সরকার টিকে থাকতে পারত না। অর্থনীতিবিদরা বলেছিলেন, অর্থনীতির যে পথে এগোচ্ছিল, তাতে ওই সরকার একদিন ভেঙে পড়বেই। অর্থপাচার, ব্যাংকিং খাতের দুরবস্থা এবং রিজার্ভের পতন তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ ছিল। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে চলে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক লেনদেনও কঠিন হয়ে পড়েছিল। ব্যাংকগুলোর মালিকরা, প্রতিষ্ঠাতারা, উদ্যোক্তারা তাদের টাকা বিদেশে পাচার করে দেশের ব্যাংকগুলিকে খালি করে ফেলেছিলেন। তারা জানতেন যে, ব্যাংকগুলো আর টিকে থাকবে না। যদি সেই পরিস্থিতি চলতে থাকত, কিছু ব্যাংক তখনই দেউলিয়া হয়ে যেত। পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার পর, অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাংকিং খাতের পুনর্গঠন পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ওই পরিকল্পনায় ব্যাংক খাতকে ধীরে ধীরে পুনরুজ্জীবিত করার পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়েছে।
এখন বিদেশি টাকা পাচার বন্ধ হয়েছে, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়ছে, কিন্তু তবুও রিজার্ভ কেন বৃদ্ধি পাচ্ছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এক কারণ হল বিদেশি ঋণ পরিশোধ বাড়ছে এবং ভবিষ্যতে তা আরও বাড়বে। এছাড়া, বৈদেশিক সাহায্যও কমেছে এবং প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) হ্রাস পেয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে, এফডিআই আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে, অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
১৩১ বার পড়া হয়েছে