চিকিৎসকদের জন্য আলাদা ক্যাডারের সুপারিশ করবে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন

সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০২৫ ৩:৩৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন চিকিৎসকদের জন্য একটি পৃথক স্বাস্থ্য ক্যাডার প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করবে, যার নাম হবে ‘বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিসেস’।
কমিশনের প্রতিবেদনে কিছু রোগনির্ণয় পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ, ওষুধের দাম সাশ্রয়ী রাখা, চিকিৎসক ও ওষুধ কোম্পানির সম্পর্কের বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন, বেসরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা এবং দরিদ্রদের চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
কমিশন তাদের প্রতিবেদন পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগেই জমা দিতে পারে বলে জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের সংস্কারের জন্য তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘সিক্স বিল্ডিং ব্লকস’ কাঠামো গ্রহণ করেছে, যা স্বাস্থ্যব্যবস্থার মূল উপাদান হিসেবে গণ্য করা হয়—এগুলো হলো স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্য জনবল, স্বাস্থ্য তথ্যব্যবস্থা, অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ, স্বাস্থ্য অর্থায়ন এবং নেতৃত্ব-সুশাসন। কমিশন এই কাঠামোর মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্য খাতের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করবে এবং সংশ্লিষ্ট সুপারিশ দেবে।
কমিশনের সদস্যরা জনগণের মতামত, চাহিদা এবং পরামর্শ জানার জন্য সাতটি বিভাগে সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন করেছেন, ঢাকা ছাড়া অন্যান্য বিভাগে এই সেমিনারগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংগঠন এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সঙ্গেও পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) একটি জনমত জরিপের ফলও কমিশনের প্রতিবেদনে গুরুত্ব পেয়েছে।
কমিশন, যা ১২ সদস্য নিয়ে গঠিত, স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ করবে। এই সুপারিশের মধ্যে রয়েছে—স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে তিনটি বিভাগে বিভক্ত করা এবং প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা সিনিয়র সচিব নিয়োগের প্রস্তাব। এছাড়া, ‘রিজিওনাল হেলথ সার্ভিসেস’ প্রতিষ্ঠা এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলোর ব্যবস্থাপনা বোর্ড গঠন, শয্যার ১০ শতাংশ গরিব রোগীর জন্য সংরক্ষণ, ওষুধ কোম্পানির মালিকদের হাসপাতাল মালিক হতে নিষেধ করা ইত্যাদি বিষয়গুলোও সুপারিশের অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
কমিশন, স্বাস্থ্য খাতের কাঠামো উন্নত করতে, একটি স্বাস্থ্য কমিশন প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দিতে পারে, যা স্বাস্থ্য খাতের সর্বোচ্চ তদারকি করবে এবং প্রয়োজনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হবে। এছাড়া, কমিশন বিশেষভাবে ওষুধের দাম এবং মান নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব দেবে। তাদের প্রস্তাব থাকবে, চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে যেন শুধুমাত্র জেনেরিক নাম (মূল বৈজ্ঞানিক নাম) ব্যবহার করা হয়।
স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগগুলি, দেশজুড়ে স্বাস্থ্য খাতের দুর্বলতা এবং দুর্নীতির বিষয়ে জনগণের ক্ষোভের প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তবে, এই সংস্কারের প্রয়োগের জন্য সরকার সংস্কারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রস্তুত রয়েছে এবং কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে একটি সেল গঠন করার প্রস্তাবও রয়েছে।
১৩৪ বার পড়া হয়েছে