নেতানিয়াহু বিরোধী স্লোগানে প্রকম্পিত ইসরায়েল

শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫ ৩:২৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে হামলার প্রতিবাদে ইসরায়েলের জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি চুক্তির দাবিতে এবং শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠেছে, যার মধ্যে রাজপথে ‘নেতানিয়াহুর পতন’ স্লোগান চলছে। গত চতুর্থ দিনের মতো, জেরুজালেমে নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে এবং তেল আবিবসহ অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা করেছে যে, নেতানিয়াহুর পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা একত্রিত থাকবে।
এতদিন গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকার পর, গত মঙ্গলবার ইসরায়েলি হামলা শুরু হলে সাধারণ ইসরায়েলিদের মধ্যে নেতানিয়াহুর প্রতি ক্ষোভ বেড়ে যায়। এর ফলে গাজার বাকি ৫৯ জন বন্দির ভাগ্যও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে, রোনেন বারকে বরখাস্ত করার পরও বিক্ষোভের স্রোত অব্যাহত ছিল, যা পরে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা দেশটির গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো অবরোধ করে এবং ‘ইতিহাস তৈরি করে জনগণ’ স্লোগান দেয়।
তেল আবিব ও জেরুজালেমে রাতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে, যেখানে অনেক বিক্ষোভকারী উত্তেজিত হয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল। পুলিশও জলকামান ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে বাধ্য হয় এবং বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। এছাড়া, ইসরায়েলের হাইকোর্ট শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্তের বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং আদালত আগামী ৮ এপ্রিলের মধ্যে এই বিষয়ে শুনানি করবে।
গাজার হাসপাতালগুলো, বিশেষ করে ক্যান্সার চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী তুর্কি ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালও ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়েছে। জাতিসংঘের ইউএনআরডব্লিউএর মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজায় খাদ্য সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর কাছে মাত্র ছয় দিনের জন্য পর্যাপ্ত আটা আছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসরায়েলের আসল উদ্দেশ্য হলো গাজাকে জনশূন্য করা। শিন বেতের প্রধান রোনেন বার অভিযোগ করেছেন যে, নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর আসল ইচ্ছা না রেখেই আলোচনা চালিয়েছেন। দোহা ইনস্টিটিউটের মোহাম্মদ এলমাসরি বলেছেন, ইসরায়েলের লক্ষ্য হলো বিপুল সংখ্যক মানুষ হত্যা করে গাজাকে জনশূন্য করে ফেলা।
এদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফের হামলা শুরুর পর শিশুসহ নিহতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। ইউনিসেফের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই সপ্তাহে গাজায় ২০০’র বেশি শিশু নিহত হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় ৫৯০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
১৪৭ বার পড়া হয়েছে