ট্রাম্পের নাম ও ছবি দিয়ে ই-ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে ডিএনসিসি

বৃহস্পতিবার , ২০ মার্চ, ২০২৫ ৭:০৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) থেকে সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে একটি ই-ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে।
লাইসেন্সটি ১১ মার্চ বিকেল বেলায় প্রদান করা হয় এবং এর আওতায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নাম ‘ট্রাম্প এসোসিয়েশন’ উল্লেখ করা হয়েছে। লাইসেন্সে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাবা-মা'র নাম ফ্রেড ট্রাম্প ও ম্যারি অ্যান ম্যাকলিওড ট্রাম্প উল্লেখ করা হয়েছে, যা আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্টের মা-বাবার নামের সঙ্গে মিলে যায়। আরও আশ্চর্যজনক তথ্য হলো, লাইসেন্সে ট্রাম্পের একটি হাস্যোজ্জ্বল ছবি রয়েছে।
লাইসেন্সে দেওয়া আবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ঠিকানা ঢাকা শহরের আফতাবনগর হলেও ব্যক্তিগত তথ্য এবং ঠিকানা জানিয়েছেন নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্রের। যদিও বিষয়টি অবাক করার বিষয় হলেও তা সত্যি! ডিএনসিসির রাজস্ব বিভাগ ট্রাম্পের নামে এমন একটি ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আবেদনকারী লাইসেন্সের জন্য নির্ধারিত ফি ২ হাজার ২৬৫ টাকা ডিএনসিসির কাছে পরিশোধ করেছেন। লাইসেন্সের মোট মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। নিয়ম অনুযায়ী, আবেদনকারী এই লাইসেন্স মেয়াদকালের মধ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারবেন।
লাইসেন্সের আবেদনের সঙ্গে দুটি নথি সংযুক্ত করা হয়েছে—একটি অফিস ভাড়ার চুক্তিপত্র এবং অন্যটি একজন চীনা নাগরিকের বাংলাদেশ ভিসার কপি। লাইসেন্সটি প্রস্তুত হয়েছে ডিএনসিসির অঞ্চল-১০ এর সাতারকুল এলাকা থেকে।
আফতাবনগরের ৪০/৪২ নম্বর বাড়িটি গিয়ে দেখা যায়, এটি একটি আবাসিক ভবন, যেখানে কোন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নেই। বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ নাহিদ জানান, এই ভবনে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিস নেই এবং লাইসেন্সটি ভুয়া।
লাইসেন্সের প্রতিবেদনে একজন চীনা নাগরিকের ভিসার তথ্যও রয়েছে, যার মেয়াদ আগামী ২২ মে পর্যন্ত। এছাড়া, লাইসেন্সের আবেদনপত্রে আবাসিক এলাকার ঠিকানায় অফিস ভাড়ার চুক্তিপত্রও যুক্ত করা হয়েছে, যা পূর্বে নিষিদ্ধ ছিল।
ডিএনসিসির কর্মকর্তাদের মতে, ই-ট্রেড লাইসেন্স সেবা স্বয়ংক্রিয়করণ করার পর এই ধরনের ভুয়া লাইসেন্সের সংখ্যা বেড়ে গেছে। লাইসেন্সের জন্য আবেদনের আগে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া নেই, যার ফলে ভুয়া ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া লাইসেন্স ইস্যু হচ্ছে।
আমাদের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির ফলে ব্যবসায়ীরা সহজেই লাইসেন্স পাচ্ছেন, তবে এর ফলে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ও আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
বর্তমানে কর্তৃপক্ষ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে লাইসেন্স ইস্যু করার সময় কিছু ব্যবসার জন্য যাচাই-বাছাই বাধ্যতামূলক করেছে। আইন অনুযায়ী, সত্য তথ্য না দিলে লাইসেন্স বাতিল হবে এবং আবাসিক ঠিকানায় লাইসেন্স নিলে সেটিও বাতিল হবে। তবে এখন আবেদনকারীর দায়িত্ব সত্য তথ্য প্রদান করা।
১২২ বার পড়া হয়েছে