সর্বশেষ

ধর্ম

রমজানের শেষ দশকে আত্মমগ্ন হতে হয় প্রভুর সান্নিধ্য কামনায়

ডেস্ক রিপোর্ট
ডেস্ক রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার , ২০ মার্চ, ২০২৫ ৩:২১ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
রমজান মাসের দিনগুলি দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। আমরা এখন রহমত এবং মাগফিরাতের দুই দশক পার করে শেষ দশকের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছি। এই শেষ দশকে ইতিকাফের মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য কামনা করতে হবে।

ইতিকাফের নিয়তকারী ব্যক্তি ২০ রমজান আসরের নামাজের পর সূর্যাস্তের আগে মসজিদে পৌঁছে, একটি কোণে ঘরের মতো স্থান তৈরি করে সেখানে অবস্থান করবেন, এমনভাবে যেন জামাতের জন্য প্রয়োজন হলে পর্দা খুলে মুসল্লিদের নামাজের ব্যবস্থা করা যায়। এখানে তিনি পানাহার এবং শয়ন করবেন, তবে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এই স্থান ত্যাগ করবেন না। নারীরা তাদের ঘরের নির্দিষ্ট স্থানে নামাজ আদায় করলে, সেখানে ইতিকাফ করবেন এবং ঈদের চাঁদ দেখা না হওয়া পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করবেন। ঈদ বা শাওয়াল চাঁদ দেখা গেলে ইতিকাফ শেষ হবে।

ইতিকাফের সময় খুব বেশি নেই, তাই এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। প্রতিটি এলাকা থেকে অন্তত একজন বালেগ পুরুষকে ইতিকাফে বসতে হবে। একাধিক ব্যক্তি এক মসজিদে ইতিকাফ করতে পারবেন। সবার উচিত মনে মনে ইতিকাফের জন্য আগ্রহী থাকা এবং নিয়ত করা। যিনি ইতিকাফে বসার চূড়ান্ত নিয়ত করবেন, তার বিশেষ প্রস্তুতির প্রয়োজন। মসজিদে থাকার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, সেগুলোর ব্যবস্থা আগেভাগেই করতে হবে। ইফতার ও সেহরি কে করবে, বাজার করবে কে, ঈদের বাজার, ফিতরা আদায়ের ব্যবস্থা, সন্তানদের আবদার পূরণ, কারও ঋণ পরিশোধ ইত্যাদি কাজগুলো এখনই সেরে ফেলতে হবে, যাতে ইতিকাফে বসার সময় এসব চিন্তা না করতে হয়। যারা ইতিকাফে বসার জন্য প্রস্তুত, তারা যেন এখন থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে নেয়।

ইতিকাফ অবশ্যই একটি অতিরিক্ত ইবাদত, তবে এর মাধ্যমে অনেক মহান পুরস্কার লাভের সুযোগ থাকে। ইতিকাফের মাধ্যমে লাইলাতুল কদরের রাত্রির সওয়াব লাভের আশা করা যায়। এ কারণে ইতিকাফের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। কোরআনে ইতিকাফের বিধি-বিধান উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, সুরা বাকারা (১৮৭) তে বলা হয়েছে, “আর তোমরা যখন ইতিকাফ করবে, তখন স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করো না। এগুলো আল্লাহর বেঁধে দেওয়া সীমারেখা। সুতরাং এর কাছেও যেও না। এভাবে আল্লাহ তার নির্দেশনাবলি মানুষের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তারা সতর্ক থাকতে পারে।”

ইতিকাফের আগেই আল্লাহর কাছে কিছু বিশেষ দাবি স্থির করে নিলে ভালো হয়। মসজিদে বসে একান্তভাবে আল্লাহর কাছে এসব দাবি পেশ করতে হবে। দুনিয়াবি সব সম্পর্ক ত্যাগ করে, একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর দরবারে অবস্থান করা ইতিকাফের উদ্দেশ্য। ঠিক যেমন কেউ যখন কোনো বড় ব্যক্তির কাছে কোনো দাবিতে যান, তখন সেই দাবি পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তার স্থান ত্যাগ করেন না। ইতিকাফও তেমনি একটি বিষয়। ইতিকাফে বসে আমাদের উচিত ভালো কথা বলা, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, তাহাজ্জুদ এবং নফল নামাজ পড়া। বিশেষ করে ২১ থেকে ২৯ রমজান পর্যন্ত বেজোড় রাত্রিগুলো এবং ঈদের রাতগুলোতে বেশি বেশি ইবাদত করা উচিত।

ইতিকাফ মানুষকে দুনিয়ার সমস্ত ব্যস্ততা ত্যাগ করে একমনে আল্লাহর ইবাদত করার সুযোগ দেয় এবং তাকে আল্লাহর সান্নিধ্যে এনে তার ভালোবাসা ও তওবা তাজা করে তোলে। ইতিকাফের মাধ্যমে দুনিয়ার ভোগ-বিলাস থেকে মন সাফ হয়ে আল্লাহর প্রতি একাগ্র হয়ে ওঠে। এটি মানুষের জন্য একটি বিশাল সুযোগ, যা আমাদের জীবনকে আল্লাহর পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। যারা ইতিকাফে বসতে পারেন না, তারা যেন অন্যদের উৎসাহিত করেন এবং ইতিকাফকারীদের সাহায্য করতে পারেন।

অতএব, আমাদের সবার উচিত ইতিকাফের ফজিলত লাভের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া এবং এটিকে জীবনের একটি মহামূল্যবান সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করা।

১৩৭ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
ধর্ম নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন