মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনা বেশি ঘটছে প্রবাসীদের গাড়িতে

বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫ ৩:৫৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনা দিন দিন বাড়ছে, বিশেষ করে প্রবাসীদের লক্ষ্য করে এসব অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
ঢাকার ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে এসব ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে থাকে। এছাড়া, যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক এবং কাভার্ড ভ্যানেও নিয়মিত ডাকাতির ঘটনা ঘটছে।
হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক ডাকাতির পর পুলিশ ১,৪৪৩ জন ডাকাতের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে। সেই তালিকা অনুযায়ী গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করা হয়েছে। মহাসড়কে ডাকাতি প্রতিরোধে ইতিমধ্যে নিয়মিত টহলের পাশাপাশি আরও ৭০০ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিশেষত প্রবাসীদের গাড়ি ‘টার্গেট’ করে মহাসড়কে যেসব ডাকাতির ঘটনা ঘটছে, তা প্রতিরোধ করতে ঢাকা বিমানবন্দরে একটি ‘হেল্প ডেস্ক’ চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে প্রবাসীরা যেসব গাড়ি ভাড়া করে বাড়ি যাচ্ছেন, সেই গাড়ির ভিডিও ধারণ, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর, চালকের লাইসেন্সের কপি এবং মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করা হবে। একাধিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ওই গাড়ির গতিপথ পর্যবেক্ষণ করা হবে।
কিছু চালক জানান, বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পর কুমিল্লা এলাকায় ডাকাতি সবচেয়ে বেশি ঘটে থাকে। সম্প্রতি শেরপুরে ডাকাতির কবলে পড়েছিলেন এক প্রবাসী। সেখানে ডাকাতরা গাড়ি থামানোর চেষ্টা করলেও চালক দ্রুত গাড়ি চালিয়ে রক্ষা পান। তবে, ডাকাতের আঘাতে গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। অনেকেই অভিযোগ করছেন, এই ডাকাত চক্রের সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যের যোগসাজশ রয়েছে।
সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ৭৪টি ডাকাতির মামলা হয়েছে, যা জানুয়ারির ৭১টি মামলার চেয়ে বেশি। একাধিক স্থানীয় প্রশাসনও মহাসড়কে ডাকাতি প্রতিরোধে আরও তৎপর হয়েছে। বিশেষ করে কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ বেশ কিছু এলাকা সেভাবে নিরাপদ নয়। মহাসড়কের নির্জন এলাকায় ডাকাতরা গাড়ি আটকে বা রাস্তায় রড, টায়ার ফেলে ডাকাতি করছে।
বিভিন্ন সড়কে শুধু প্রবাসীদের গাড়ি নয়, যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানেও ডাকাতি ঘটছে। এসব ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযানে নিয়মিতভাবে পুলিশ তৎপর থাকলেও অনেক সময় ডাকাতদের সঙ্গে স্থানীয় কিছু অপরাধী সদস্যের যোগসাজশ থাকার অভিযোগ উঠছে।
সম্প্রতি, কুমিল্লায় একাধিক প্রবাসী গাড়ি ডাকাতির পর পুলিশ ৪ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কাছে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে ডাকাতির চক্রগুলো একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এছাড়া, বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানে ডাকাতি ঘটনা ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। একাধিক জায়গায় ট্রাক আটকে, পণ্য চুরি করে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। তবে, কিছু ডাকাত দলের সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা ট্রাক মালিকদের সঙ্গে টাকা দিয়ে মীমাংসা করেন এবং মামলা হয় না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনা বন্ধ করতে হলে নতুন প্রযুক্তি ও সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগসাজশ বন্ধ করতে হবে। অন্যথায়, মহাসড়কগুলোতে ডাকাতির ঘটনা কমবে না।
১১৬ বার পড়া হয়েছে