সর্বশেষ

সারাদেশ

উপকূলীয়দের স্বাস্থ্যসেবার পথ দেখাচ্ছে সাতক্ষীরার ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা
স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা

মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫ ২:২১ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা অন্যতম।

সুন্দরবনের পাশের সাতক্ষীরার শ্যামগনগর ও আশাশুনি উপজেলার একটি বড় অংশ বর্তমানে লবনাক্ততার কবলে রয়েছে। এই লবনাক্ততার বিরূপ প্রভাব সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় কতটা গভীরভাবে প্রবাহিত হয়েছে, তা এখানে বসবাসরত মানুষের জীবনযাপন দেখলে পরিস্কার বোঝা যায়।

বর্তমানে, এখানকার মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারগুলোর মহিলাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। লবনাক্ততার মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকা পরিবারগুলোর নারীরা অসহায়ত্বের শিকার। দেশি ও বিদেশি অনেক সমস্যার সঙ্গেই লড়াই করতে হচ্ছে তাদের। সাতক্ষীরা শ্যামগনগর এলাকায় লবনাক্ততা এত বেশি প্রকট যে, স্বাদু পানির অভাবে ৬ মাসের বেশি সময় ভোগান্তিতে কাটাতে হচ্ছে। রান্নাবান্না, গোসল, এবং অন্যান্য কাজের জন্য লবণাক্ত পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে তাঁদের। এর ফলে মহিলাদের মধ্যে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ছে। উপার্জনের প্রয়োজনে পুরুষেরা বছরের বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকেন, কিন্তু মহিলাদের সে সুযোগ নেই।

স্থানীয় গবেষণা অনুসারে, উপকূলীয় লবনাক্ত অঞ্চলে প্রতিবন্ধী ও বিকলাঙ্গ শিশুর জন্মহার অন্যান্য স্থানের তুলনায় বেশি। কিশোরীদের বিশেষ স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে, যার মধ্যে ‘জেনিটাল অর্গান’ সম্পর্কিত সমস্যা ও অন্যান্য মারাত্মক রোগের প্রসার উল্লেখযোগ্য। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লবনাক্ত উপকূলের নারীরা বর্তমানে একটি বিভীষিকাময় জীবনযাপন করছেন।

স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতার মধ্যে এই অঞ্চলে, বিশেষ করে মহিলাদের এবং শিশুদের জন্য, স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল। হাসপাতালের পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্ণেল ডাঃ মুজাহিদুল হক জানান, ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ২০১৮ সাল থেকে সার্ভিক্যাল ক্যান্সার স্ক্রিনিং টেস্ট চালু হয়েছে, যা নারী স্বাস্থ্যসেবায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ডাঃ মুজাহিদুল হক আরও বলেন, হাসপাতালটি শুধুমাত্র মহিলা ও কিশোরীদের জন্য বিশেষ সেবা দিচ্ছে না বরং চর্ম এবং চোখের সমস্যা সহ লবনাক্ত অঞ্চলের অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে কাজ করছে।

শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ জিয়াউর রহমান জানান, বাংলাদেশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর মধ্যে সার্ভিক্যাল ক্যান্সার স্ক্রিনিং টেস্টের উপস্থিতি থাকলেও লবনাক্ত অঞ্চলে এসবের গুরুত্ব অনেক বেশি। শ্যামনগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রেই মাসে প্রায় ১০০ জন রোগী এই ধরনের চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালও এ সমস্ত মহিলাদের জন্য বিশেষ সেবা প্রদান করছে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত উদ্যোগ চলতে থাকলে শহরের পাশাপাশি গ্রামের মহিলাদের জন্য সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের মতো বিপজ্জনক রোগের মোকাবেলায় একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি হবে।

১৩২ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন