সর্বশেষ

সারাদেশ

নওগাঁয় আম উৎপাদনে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বাণিজ্যের সম্ভাবনা

মামুনুর রশীদ বাবু, নওগাঁ
মামুনুর রশীদ বাবু, নওগাঁ

রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫ ১:০৪ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
নওগাঁ, দেশের একটি প্রধান আম উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিত, যেখানে গত কয়েক বছরে এবার আমের মুকুলের আগমন সবচেয়ে বেশি হয়েছে।

নওগাঁর পরিবেশে এখন মুকুলের মিষ্টি গন্ধ ভাসছে। চলমান আবহাওয়া আমচাষের জন্য বেশ অনুকূল, ফলে এই বছর বাম্পার ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।

কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন পর্যন্ত আবহাওয়া আমের জন্য সহায়ক রয়েছে। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটে, তাহলে এই বছর আমের ফলন উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, গত বছরের তুলনায় এবার ২০০ হেক্টর বেশি জমিতে আমের চাষ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এবারে ফলন ২৫ হাজার মেট্রিক টন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।

চাষিরা জানান, প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী, একটি বছরের ভালো ফলন হলে পরের বছরে ফলন কমে যায়। গত বছর নওগাঁয় আমের ফলন কম হওয়ায়, এবারে কয়েকটি কারণে তাঁরা আবারো বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা করছেন। তাঁদের উদ্যোগে, মুকুলকে ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। চাষিরা আমগাছের গোড়ায় প্রয়োজন মতো জলও সরবরাহ করছেন।

এদিকে, মুকুল আসার সঙ্গে সঙ্গে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা মাঠে নেমে পড়েছেন। তাঁরা আমবাগান কিনতে মালিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। গত কয়েকদিন ধরে বাগানে মুকুল গুটিতে পরিণত হওয়ার পরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে আলোচনা বৃদ্ধি পেয়েছে।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বর্তমানে জেলায় ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হচ্ছে, যা গত বছরের ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টরের তুলনায় বেড়েছে। গত বছর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩১ হাজার মেট্রিক টন, যা উৎপন্ন হয়েছিল ৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। এবারের উৎপাদন ৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নওগাঁর সাপাহার এবং পোরশা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদিত হয়। এছাড়া, নিয়ামতপুর, পত্নীতলা, ধামইরহাট ও বদলগাছি এলাকাগুলোও উল্লেখযোগ্য আম উৎপাদনের জন্য পরিচিত।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, নওগাঁ জেলায় নাগফজলি, ল্যাংড়া, আম রুপালি, গোপালভোগ, আশ্বিনা, কাটিমন, বারি আম-৪, বারি আম-১১, গুটি আম এবং ফজলি জাতের সুস্বাদু আমের উৎপাদন ঝুঁকিপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পাবে।

সাপাহার উপজেলার গোডাউনপাড়া এলাকার তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা সোহেল রানা জানান যে, গত বছরে তার বাগানে ৫০-৬০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছিল। তবে এবারে ৮০ শতাংশ গাছে মুকুল আসার আশা করছেন। তিনি জানালেন, ফাল্গুন মাস আমের মুকুল আসার জন্য আদর্শ সময় এবং আবহাওয়াও বর্তমানে মূলত ভালো রয়েছে।

পোরশা উপজেলার বড়গ্রামের কৃষক রায়হান আলম জানান, গেল বছর শীতের কারণে আমের মুকুল আসতে দেরি হয়েছিল, কিন্তু এবারে খানিকটা আগে এসেছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে, এই বছর আমের উৎপাদন হতে পারে ভালো।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ মন্তব্য করেন, সাধারণভাবে দেখা যায়, তাপমাত্রা যদি ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকে, তাহলে আমের মুকুল উৎপন্ন হতে চায় না। এবারে জানুয়ারিতে সামান্য শৈত্যপ্রবাহ হলেও, তা দীর্ঘস্থায়ী ছিল না এবং গড় তাপমাত্রা যে ২০ ডিগ্রির আশেপাশে ছিল, সেটি আমবাগানের জন্য অনুকূল। তবে কুয়াশার কারণে মুকুলে ছত্রাকের আক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে, তাই কৃষকদের ছত্রাকনাশক স্প্রে করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি জানান, যদি এবারে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাধা না হয়ে থাকে, তাহলে নওগাঁর আমজ উৎপাদন ৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টনের আশাপ্রদ হতে পারে। আমের বাজার ভালো হলে, জেলার আম উৎপাদন ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা অর্জন করার সম্ভাবনা রয়েছে।

১১৭ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন