ধামরাইয়ে অবৈধ মাহিন্দ্রা গাড়ি দিয়ে ফসলী জমির মাটি কাটার অভিযোগ

শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫ ৯:৪৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ঢাকার ধামরাই উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের আমরাইল গ্রাম এলাকায় গত এক সপ্তাহ ধরে রাতভর তিন ফসলী জমির মাটি কেটে বিক্রি করার কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা অবর্ণনীয় কষ্টে ভুগছেন।
মাহিন্দ্র ও ভেকুর শব্দে ভরা রাতগুলোর কারণে তারা ঘুমাতে পারেননি। এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেন, বহিরাগত লোকদের দিয়ে রাতভর মাটি কাটা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তাদের দাবি, উপজেলা প্রশাসন অভিযোগ জানালেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জানা গেছে, বিএনপির স্থানীয় সভাপতি আমিনুর রহমান নবীউল্লাহ তার জমির মাটি ভাতকুরা এলাকার ছাত্রদল নেতা জিসান এর কাছে বিক্রি করেছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে রহস্যজনকভাবে গভীর রাতে তিন ফসলী জমির মাটি কাটার কাজ চলছে, যা ইটভাটাসহ স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। বিএনপি নেতা শওকত হোসেন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আওলাদ হোসেনের সহযোগিতায় ছাত্রদল নেতা জিসান এ ব্যবসা চালাচ্ছেন।
স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মাটি কাটার ফলে রাস্তায় ধুলা বেড়ে গেছে, যা চলাচলের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর। তারা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে বিএনপির প্রভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এলাকার লোকজন মনে করে, বাহির থেকে আনা লোকেদের কারণে তারা প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না।
আমরাইল এলাকার এক বাসিন্দা সোলায়মান জানান, এশার আজান শুরু হলেই মাটি কাটার কাজ শুরু হয়ে যায় এবং ফজর আজান হলে তা শেষ করে। প্রতিবাদ করলে তারা মারধরের হুমকি দেয়, এমনকি বাইরের লোকজনকে এনে এলাকায় টহল দিতে দেখা যায় যাতে কেউ বাধা প্রদান করতে না পারে। মাটি কাটার কারণে আশেপাশের জমি নষ্ট হতে পারে বলেও তারা আশঙ্কা করছেন।
এ বিষয়ে বিএনপির সভাপতি আমিনুর রহমান নবীউল্লাহ বলেন, "আমি আমার জমির মাটি বিক্রি করেছি, কিন্তু সে কিভাবে মাটি কাটছে, তা আমি বলতে পারবো না।"
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, "কোন অবস্থাতেই তিন ফসলী জমির মাটি বিক্রি করা যাবে না। বৈধ অনুমতি ছাড়া পুকুর কাটলেও ওই মাটি বিক্রি করা যাবে না। কৃষিজমি রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"
যাদবপুর ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তা বলেন, "এলাকাবাসী বহুবার আমাকে ফোন করেছেন। আমি লোক পাঠিয়েছি এবং তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা আমাকে কথা দিয়েছে যে আর মাটি কাটবেন না, কিন্তু রাতে আবারও মাটি কাটছেন। আমি তাদের বিষয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে পারছিনা।"
ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, "অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ পাঠিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করেছি, কিন্তু তারপরও তারা রাতের আধারে আবারও মাটি কাটছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে যোগাযোগ করুন।"
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ.এন.ও) মামনুন আহমেদ অনিকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টার পরও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এছাড়াও স্থানীয়দের অভিযোগ, বিভিন্ন এলাকা থেকে মাটি কাটা বিষয়ে অভিযোগ দিলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
১৬০ বার পড়া হয়েছে