বিশ্ব পঙ্গু দিবস আজ, ভাতা, পুনর্বাসন কার্যক্রম নিয়ে হতাশা

শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫ ৩:৩৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহতদের তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ার কারণে আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে প্রবল মন্থরতা সৃষ্টি হয়েছে।
একইসঙ্গে আহতদের চিকিৎসা ও সহায়তার জন্য নির্ধারিত ক্যাটেগরি নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন অনেকেই। কিছু আহতের উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও অর্থের অভাবে বিদেশে পাঠাতে বিলম্ব হচ্ছে।
আহতদের অধিকাংশই ছিলেন উপার্জনক্ষম এবং তাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা এখন অত্যন্ত শোচনীয়। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া ও মাসিক ভাতা চালু না হওয়ায় তারা হতাশ। বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আড়াইশেরও বেশি আন্দোলনকারী। অনেকেই ছুটি পেলেও পুনর্বাসন তালিকা থেকে বাদ পড়ার আশঙ্কায় হাসপাতালে থেকে যাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, জনবলের অভাব এবং তথ্য যাচাইয়ের সময়সীমা দীর্ঘ হওয়ায় তালিকা প্রস্তুত এবং পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরুর ক্ষেত্রে বিলম্ব হচ্ছে। তবে, হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসাধীন আহতদের জন্য স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়েছে এবং এই মাসেই জুলাই আন্দোলনে আহতদের মাসিক ভাতা দেওয়া শুরু হবে। পাশাপাশি, বিনামূল্যে চিকিৎসা সুবিধার জন্য হেলথ কার্ড প্রস্তুত করা হচ্ছে এবং পুনর্বাসন কার্যক্রম শিগগিরই শুরু হবে।
এদিকে, আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব পঙ্গু দিবস, যার প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘ক্ষতি প্রতিরোধ ও রূপান্তরিত জীবন’। তবে, সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে এই দিবসটি খুব বেশি গুরুত্ব সহকারে পালিত হয় না।
গত নভেম্বরে সরকার ‘গণঅভ্যুত্থান-সংক্রান্ত বিশেষ সেল’ গঠন করে শহীদ ও আহতদের তালিকা প্রস্তুত করার জন্য। ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে আন্দোলনে আহত, নিহত বা নিখোঁজ ব্যক্তিদের তালিকা প্রস্তুত করার কথা ছিল। ডিসেম্বরের ২১ তারিখে সেল প্রাথমিকভাবে ৮৬২ শহীদ ও ১১,৫৫১ আহতের নাম প্রকাশ করেছে। তাদের আর্থিক সহায়তার জন্য জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে। ৪ মার্চ পর্যন্ত ৮৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে ৫,৪২৯টি পরিবারের মধ্যে।
এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৫০ জন আহত রয়েছে, যাদের মধ্যে ৩০ জন উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে রয়েছেন এবং আটজন চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন। সবচেয়ে বেশি আহত ব্যক্তিরা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) ভর্তি রয়েছেন।
চিকিৎসার জন্য তিনটি ক্যাটেগরি তৈরি করা হয়েছে—গুরুতর আহতদের ‘এ’, মাঝারি আহতদের ‘বি’, এবং কম ঝুঁকিপূর্ণদের ‘সি’ ক্যাটেগরিতে রাখা হয়েছে। তবে, আহতরা এই ক্যাটেগরি নিয়ে অসন্তুষ্ট। অনেকের মতে, এটি সঠিক নয় এবং তাদের চিকিৎসায় যথাযথ সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না।
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালেও ১২০ জন আহত ভর্তি আছেন। সেখানে এখন পর্যন্ত ১,০০৩ জনের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫০৩ জনের চোখে ক্ষতি হয়েছে এবং ৪৫ জনের দুটি চোখই নষ্ট হয়ে গেছে।
আহতরা পুনর্বাসন কার্যক্রমের আশায় হাসপাতাল ছেড়েও যাচ্ছেন না, কারণ তারা মনে করেন, হাসপাতাল ছেড়ে গেলে তাদের পুনর্বাসন তালিকা থেকে বাদ পড়ার ভয় রয়েছে। স্বাস্থ্য সচিব সাইদুর রহমান জানিয়েছেন, সরকার আহতদের চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করছে এবং দ্রুত পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হবে।
১১৮ বার পড়া হয়েছে