সর্বশেষ

সারাদেশ

রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার প্রতিনিধি

শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫ ৬:২৪ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেছেন।

এই সময় অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "জাতিসংঘ মহাসচিব আপনাদের কাছে এসেছেন, আপনাদের সাহস দেওয়ার জন্য। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি আপনাদের দেশে শান্তিপূর্ণভাবে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য লড়াই করবেন। এটি একটি খুব বড় খুশির বিষয়, এবং আমরা আজ সেই খুশি অনুভব করছি। আমরা তাঁকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।"

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, "তাঁকে (আন্তোনিও গুতেরেস) কি কোনো দেশ নিয়ে যেতে পারছে? বনজঙ্গলে ঢোকানো সম্ভব নয়। তাঁরা সরকারের উচ্চ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন, কিন্তু এখানে তাদের থাকার কথা নয়। তিনি কষ্ট করে এসেছেন, নিজে রোজা রেখে আজ আপনারদের জন্য এখানে উপস্থিত হয়েছেন।"

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, "আমরা তাঁকে (আন্তোনিও গুতেরেস) বারবার বোঝাতে চাইছি, ঈদের সময় আমরা সবাই দাদা–দাদির কবর জিয়ারত করি, কিন্তু এই রোহিঙ্গাদের সেই সুযোগ নেই। তাঁরা এখানে এসেও তাঁদের প্রিয়জনের কবরের পাশে যেতে পারছে না। আমি আশা করি, আগামী বছর ঈদে আপনাদের বাড়িতে আসবেন, যেখানে তিনি একত্রিত হয়ে আপনাদের পরিবারের সঙ্গে থাকবে এবং দাদা–দাদির কবর জিয়ারত করবেন।"

প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে আরও বলেন, "আমরা এত মানুষ এখানে এসেছি। আমাদের কিছু সহায়তার প্রয়োজন নেই, আমাদের নিজের ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না, আমরা এখন মানুষের বোঝা হয়ে গেছি। আমাদের ছেলেমেয়ে এখানে বড় হতে পারছে না, তারা তাদের পরিবারের কবরের পাশে থাকতে চায়, কিন্তু তা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা এই বিষয়গুলি তাঁকে (আন্তোনিও গুতেরেস) বুঝিয়েছি।"

তিনি আরও বলেন, "আপনারা ফিরে যেতে চান, এটি সারা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিন। সারা বিশ্বের মানুষ এই বিষয়টি বুঝতে পারবে। তিনি (আন্তোনিও গুতেরেস) এই দায়িত্ব নিজে গ্রহণ করেছেন, এবং তিনি আপনাদের পরিস্থিতি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছেন।"

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, "রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করার পর আমি দুটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পেয়েছি। প্রথমত, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবশ্যই মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের অধিকার সুরক্ষিত রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে আরও ভালো পরিবেশ চায়। দুর্ভাগ্যবশত, বেশ কিছু দেশ মানবিক সহায়তা কমিয়ে দিয়েছে, যার ফলে আমাদের খাদ্য সহায়তা কমাতে হয়েছে। আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, যত দেশে সম্ভব আমি কথা বলব এবং তহবিল সংগ্রহে সহায়তা করব, যাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ না হয়।"

গুতেরেস বলেন, "আমি বিশ্বাস করি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ভুলে যাবে না, এবং আমি এই বিষয়ে তাদের জন্য আওয়াজ তুলব, কারণ এই সম্প্রদায়ের মানবিক সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"

এদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব তাঁর চার দিনের সফরে গতকাল ঢাকায় পৌঁছান এবং আজ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি শরণার্থী শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১৩ লাখের বেশি, যার মধ্যে ৮ লাখের অধিক ২০১৭ সালের আগস্টের পর শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে আসেন।

১০৪ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন