সর্বশেষ

প্রযুক্তি

অনলাইন টিকিটে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাভ, ভুক্তভোগী থেকে যায় জনসাধারণ

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

বৃহস্পতিবার , ১৩ মার্চ, ২০২৫ ১১:১৯ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
সরকারের গণপরিবহন ট্রেন সেবা ক্রমে সাধারণ জনগণের পক্ষে নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।

বর্তমানে অনলাইন ভিত্তিক টিকিট বিক্রির যে ব্যবস্থা রয়েছে, তাতে মাত্র ৫২ লাখ মানুষ ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে পারছে। কালোবাজারি বন্ধ করার লক্ষ্যে টিকিট বিক্রি অনলাইনে নিয়ে আসা হয়েছে, তবে এর সুবিধা মূলত সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হাতেই পড়েছে। একটি টিকিট বিক্রির জন্য শুধুমাত্র ২৫ পয়সা কমিশন নেওয়ার চুক্তিতে ঠিকাদার এখন পাচ্ছে সাড়ে ছয় টাকা।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গত এক দশকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলরা শুধু আন্তনগর ট্রেন চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন এবং ৯৩টি লোকাল, মেইল ও কমিউটার ট্রেন বন্ধ করে দিয়েছেন। এর ফলে নিম্নআয়ের এবং স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতকারী মানুষের ট্রেনে চড়ার সুযোগ মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। ২০২৩ সাল থেকে টিকিট বিক্রির কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে অনলাইনে কেন্দ্রীক হয়ে পড়েছে, যার ফলে ইন্টারনেট সুবিধাবিহীন মানুষেরা ট্রেনের সেবা থেকে বহুদূরে সরে গেছেন।

বর্তমানে টিকিটের ৭১ শতাংশ অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে, এর মধ্যে ২৯ শতাংশ কাউন্টারের মাধ্যমে, যা মূলত কম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতে বিক্রি হয়। কাউন্টারে টিকিট কাটার সময় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে OTP নম্বর আবশ্যক হওয়ায় এটি একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। সার্বিকভাবে এই ব্যবস্থা দেশের শিক্ষিত ও তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানুষদের জন্যই সুবিধাজনক হয়ে উঠেছে, ফলে অনেক নিম্নআয়ের এবং গ্রামীণ জনগণের জন্য টিকিট কাটা কঠিন হয়ে পড়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অনলাইনে টিকিট বিক্রির উদ্যোগটি ভালো হলেও বেশিরভাগ মানুষ টিকিট পেলে না। বিশেষ করে দালালেরা সাধারণ যাত্রীদের চেয়ে দ্রুত টিকিট কিনতে পারে। ২০২২ সাল থেকে টিকিট বিক্রির দায়িত্বে রয়েছে সহজ ডটকম, সিনেসিস এবং ভিনসেন। তাদের সাথে চুক্তি মতে, ২৫ পয়সার পরিবর্তে তারা এখন সাড়ে ছয় টাকা পাবে প্রতিটি টিকিট বিক্রির জন্য।

বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার আন্তনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হচ্ছে, তবে প্রথম ঘণ্টাতেই অনলাইনে অধিকাংশ টিকিট বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এই ব্যবস্থায় ডিজিটাল বৈষম্য স্পষ্ট হয়ে উঠছে—কারণ দেশে অর্ধেক মানুষ ইন্টারনেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

টিকেট প্রাপ্তির জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে নিবন্ধন আবশ্যক, যা আরও জটিলতা তৈরি করেছে। নিবন্ধন, স্মার্টফোনের প্রয়োজনীয়তা এবং ইন্টারনেট সুবিধার অভাবে অনেক মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

অভিযোগ রয়েছে যে, অনলাইনে টিকিট বিক্রির সুবিধার কারণে অনেক কিছুই চুক্তি অনুযায়ী কার্যকর হয়নি। এতে রেলের আয়ের পরিমাণ বেড়েছে, কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে সেবা পৌঁছার ক্ষেত্রে অন্তরায় রয়ে গেছে।

ভারতের গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, রেলের এই ব্যবস্থায় বিনিয়োগ সত্ত্বেও যাত্রী পরিবহন বাড়েনি। দর্শনীয় যে, অনলাইন সেবার উন্নয়ন যেমন দরকার, তেমনি ডিজিটাল ব্যবস্থায় পিছিয়ে পড়া জনগণের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা চালু করা জরুরি।

১৯৭ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
প্রযুক্তি নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন