জেল সুপারের মানবিকতায় নিজ দেশে ফিরে গেলেন নেপালী যুবক

মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫ ১১:১৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
নেপালী যুবক রাম রিশি চৌধুরী (২৩) অবৈধভাবে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। পাবনার ঈশ্বরদীতে তাকে পুলিশ আটক করে, পরে তিনি পাবনা কারাগারে প্রবেশ করেন।
এভাবে এক বছর আট মাস পঁচিশ দিন পর, জেল সুপার ওমর ফারুকের প্রচেষ্টায় তিনি আদালতের মাধ্যমে নিজের দেশে ফিরে যান।
রাম রিশি নেপালের সরলাহি জেলার খার কাটোল গ্রামের মি. রামজি চৌধুরী ও পুন্ডি কুমারি চৌধুরীর সন্তান। পথ ঘুরতে ঘুরতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েন এবং ঈশ্বরদী পৌঁছান। ২০২৩ সালের ১১ জুন পুলিশের হাতে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে তিনি আটক হন এবং পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়, যেখানে তিনি দীর্ঘ সময় কাটান।
জেল সুপার ওমর ফারুক জানান, আটকের পর প্রথমে তিনি নিজেকে ভারতীয় দাবী করেছিলেন, পরে জানালেন যে তিনি নেপালী। তার মানসিক অবস্থাও যথেষ্ট অসুস্থ ছিল। চিকিৎসার পর তাকে সুস্থ করা হয়। তারপর বিষয়টি নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেন। ২০২৪ সালের ২৪ নভেম্বর পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে রাম রিশির সম্পর্কিত একটি আবেদন পাঠান। বিচারক জানান যে, রাম রিশিকে নেপালী হিসাবে চিহ্নিত করতে একজন দোভাষীর প্রয়োজন হবে।
এতে করে তিনি ঢাকাস্থ নেপালী দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করেন এবং রিয়া ছেত্রী নামে একজন দোভাষী আদালতে নিয়ে আসেন। তার সাক্ষ্যের বরাতেই রাম রিশিকে নেপালী হিসেবে নিশ্চিত করেন আদালত। ২০২৫ সালের ২৩ জানুয়ারি বিচারক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “কারণ সে ভারতীয় নাগরিক নয়, তাই তাকে সাজা দেওয়া যাবে না। তাই সংশ্লিষ্ট জেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাকে নেপালে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হলো।”
তারপর সরকারি নির্দেশনা ও আদালতের অনুমতি মোতাবেক ৬ মার্চ ’২৫ তারিখে রাম রিশি চৌধুরীকে পাবনা কারাগার থেকে নেপালী দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারী ইয়োজানা বামজানের হাতে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় জেল সুপার ওমর ফারুক, জেলা প্রশাসক ইউনুস জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। দূতাবাসের মাধ্যমে তিনি স্বদেশে ফিরে যান।
জেল সুপার ওমর ফারুক বলেন, “এমন মানবিক কাজ করতে পেরে আমি আত্মিক তৃপ্তি পাই। এটি আমার কাছে নতুন নয়। আমি এর আগে মোট ২২টি প্রত্যাবাসন করেছি এবং যতদিন চাকরি করছি, ততদিন এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে চাই।”
১২৪ বার পড়া হয়েছে