সিরিয়ায় ঘরে ঘরে ঢুকে হত্যা, মরদেহ পড়ে আছে খোলা মাঠে

সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫ ৬:৪০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
সিরিয়ায় শান্তির আশা এখন অনেক দূরে, যখন হামলার খবর আসছে প্রতিনিয়ত। ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী শহর লাতাকিয়া থেকে শুরু করে পাশের শহর তারতুস পর্যন্ত, সেখানে গুলি ও হত্যা চলছে নির্বিচারে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বন্দুকধারীরা ঘরে ঘরে ঢুকে সাধারণ মানুষদের হত্যা করছে। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তাঁর বন্ধুর বাগ্দত্তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এবং চিকিৎসা সহায়তার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি, যার কারণে তিনি মারা যান।
স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এক মহিলা প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তাঁদের মহল্লা থেকে ২০টি গাড়ি নিয়ে গেছে অস্ত্রধারীরা। এসব অস্ত্রধারীরা নিজেদের হায়াত আল-শামের যোদ্ধা দাবি করলেও, অনেকেই তাদের ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হিসেবে চিহ্নিত করছেন। কাছাকাছি এলাকায় কিছু সাধারণ নাগরিক রাশিয়ার পরিচালিত বিমানঘাঁটিতে পালানোর চেষ্টা করেছেন, তবে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের কাছে তাদের নিজেদের পরিচয় দিতে হয়েছে।
সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি বিশেষ করে বাশার আল-আসাদের শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক হামলার মধ্যে পড়েছে। সংঘাতের ফলে হাজার হাজার মানুষ হতাহত হয়েছে। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, দুই দিনে এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। এর মধ্যে আলাউইত সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। বিদ্রোহীরা এ সম্প্রদায়ের সবাইকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালাচ্ছে, যদিও বাশার আল-আসাদের পরিবারের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক নেই।
সিরিয়ার নতুন সরকারের প্রধান আহমেদ আল-শারা আফসোস প্রকাশ করেছেন এবং সাধারণ জনগণের শান্তিকে বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যারা সাধারণ মানুষকে নিশানা করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, সৌদি আরব সংঘাতের নিন্দা করেছে এবং নতুন সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। জাতিসংঘের বিশেষ দূত সাধারণ নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য সকল পক্ষকে সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এটি ব্যাখ্যা করে যে, আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা এবং সাধারণ মানুষের সুরক্ষা দিতে হবে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার জনগণ এখন বঙ্গবন্ধুর মতোই নিঃস্ব। রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং হত্যাযজ্ঞের কারণে প্রায় সকলেই আতঙ্কিত এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা এবং অনিশ্চয়তা কাটাতে হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। আগামীতে যাকথা বলা হচ্ছে, তা কতটা বাস্তবসম্মত হবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
১২৭ বার পড়া হয়েছে