অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ধর্ষণের সময় আটক ২, রোমহর্ষক কাহিনী

রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫ ১:৫৩ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে একটি অন্তঃসত্ত্বা নারী (২০) দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
তাঁরা জানাচ্ছেন, যেখানে এই নারীর ওপর বর্বরোচিত ঘটনা ঘটেছে, সেটি কিছুদিন ধরে পরিত্যক্ত ছিল। সন্ধ্যা হলে সেখানে 'কিশোর গ্যাং' এর সদস্যদের মাদক সেবন ও জুয়ার আসর বসতো।
শনিবার রাতের দিকে পানগাঁও ঋষিপাড়া এলাকায় যিনি চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে গিয়েছিলেন, সেখানে উপস্থিত ছিল সাড়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা এর সঙ্গে জড়িত দুজনকে আটক করে। তবে ঘটনার সময় কৌশলে পালিয়ে যায় অপর দুজন অভিযুক্ত।
ভুক্তভোগী নারী আজ রোববার সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন, যেখানে অভিযুক্ত হিসেবে আশরাফুল ইসলাম (২০), জীত সরকার (১৯), মো. লিমন (১৮) এবং মো. ইয়াসিন (১৮) নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে আশরাফুল এবং জীত পুলিশ ধরে ফেলেছে, অন্য দিকে লিমন ও ইয়াসিন পলাতক। ভুক্তভোগী নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার এবং পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক বছর আগে ভুক্তভোগী নারী একটি যুবককে পরিবারবিরোধীভাবে বিয়ে করেন। বর্তমানে তিনি সাড়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ১৫ দিন পূর্বে স্বামী মনোমালিন্য করে তাকে ঢাকায় রেখে চলে যান, যার ফলে তিনি বাবার বাড়ি চাঁদপুরে ফিরে যান। পরিবারের অসমর্থন থাকায় তিনি আবারো ঢাকায় আসতে বাধ্য হন এবং ওইরাতে একটি মাজারে রাত কাটান।
শনিবার সন্ধ্যায় আশরাফুল ও জীত তাকে আশ্রয় দেওয়ার কথা বলে অটোরিকশায় পানগাঁও ঋষিপাড়া এলাকায় নিয়ে যান। পরে সেখানে আরও দুজন জড়ো হয়ে তাকে ধর্ষণ করতে থাকে। রাত একটার দিকে নারীর চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে আশরাফুল ও জীতকে আটক করেন, অন্যরা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় পুলিশ এসে আটক দুই যুবককে গ্রেফতার করে এবং ভুক্তভোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পরিত্যক্ত একটি বাড়িতে সীমানাদেয়াল এবং তালাবদ্ধ ঘর রয়েছে, যা ভুতুড়ে অবস্থায় দেখা যাচ্ছে।
মন্টু মিয়া, বাড়িটির দেখভালকারী, জানিয়েছেন যে তিনি ওই বাড়িটি বন্ধ রাখায় এবং অব্যবহৃত অবস্থায় থাকার কারণে এই ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয়দের মতে, অভিযুক্তরা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তদন্তের জন্য গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হচ্ছে এবং অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারে অভিযান চলছে। আদালতে হাজির করে তাদের বিরুদ্ধে চার দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে, যা মঞ্জুর হয়েছে।
১২৭ বার পড়া হয়েছে