সর্বশেষ

সারাদেশ

নওগাঁয় আমের মুকুলের ঘ্রাণে সুরভিত চারপাশ, উচ্চ ফলনের আশা

মামুনুর রশীদ বাবু, নওগাঁ
মামুনুর রশীদ বাবু, নওগাঁ

রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫ ১:২৫ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
বসন্তের আগমনে নওগাঁর আম বাগানগুলো এখন মুকুলের স্নিগ্ধ সৌরভে ভাসছে। আমের মুকুলের মিষ্টি গন্ধে চারপাশ ফাঁসে গেছে।

দূর থেকে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে, গাছে গাছে ঝুলে আছে অসংখ্য মুকুল, যা আসন্ন আম মৌসুমের ইঙ্গিত দেয়। কৃষকদের মুখে এবার হাসি ফুটেছে, কারণ গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকাতে মুকুল এসেছে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ গাছে। ফলে উচ্চ ফলনের প্রত্যাশা করেছেন জেলার কৃষকরা।

জেলায় সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদন হয় সাপাহার, পোরশা এবং পত্নীতলা উপজেলায়। সম্প্রতি সাপাহার ও পোরশার আম বাগানগুলোতে পরিদর্শন করলে দেখা যায়, প্রায় সব বাগানেই মুকুলে ছেয়ে গেছে। আবহাওয়া সহায়ক থাকায় এখন পর্যন্ত কোনো রোগ-বালাই নেই। তবে অনেকে সতর্কতা হিসেবে বাগানে ছত্রাক নাশক ব্যবহার করছেন। আবহাওয়া যেমন থাকলে, কৃষকেরা আশা করছেন এবছর উচ্চ ফলন হবে গত বছরের তুলনায়।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরে জেলায় ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টন আশা করা হচ্ছে। গত বছর এ জেলায় ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছিল এবং উৎপাদন হয়েছিল ৪ লক্ষ ২৫ হাজার টন। এবছর আমের চাষে ২০০ হেক্টর জমির বৃদ্ধি ঘটেছে।

পোরশা উপজেলার আমইড় গ্রামের চাষি মতিউর রহমান বলেন, "এবছর মৌসুমের শুরুর দিকে কিছুটা ঘন কুয়াশা থাকলেও এখন আর সেটি নেই। মুকুলের এই সময়ে উকুণ পোকা ও কারেন্ট পোকা আক্রমণ করে, কিন্তু এবছর এসব পোকা দেখা যায়নি। গত বছর ৫০-৬০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছিল, এবছর প্রায় ৯০ শতাংশ গাছেই মুকুল এসেছে। আবহাওয়া আমের অনুকূলেই রয়েছে, তাই আশা করি গত বছরের তুলনায় ফলন বেশি হবে।"

সাপাহার উপজেলার বাহাপুর গ্রামের চাষি রাকিব হোসেন বলেন, "নিজস্ব ১৩ বিঘা জমিতে আমের চাষ করি। গত বছর ৭ লক্ষ টাকার আম বিক্রি করেছি। এবছর বাগানে প্রায় সব গাছেই মুকুল এসেছে, তবে কীটনাশকের দাম বাড়ার কারণে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত মনে হচ্ছে। সরকার যাতে কীটনাশকের দাম সহনশীল রাখে, সে বিষয়ে আমার আবেদন।"

বিদ্যানন্দি গ্রামের আমচাষি মজনুর রহমান জানান, "নিজস্ব ৩ বিঘা জমিতে আম বাগান রয়েছে। এবছর বাগানে মুকুলের পরিমাণ অনেক বেশি। মুকুলের এই সময়ে উকুণ পোকা, মাছি এবং কারেন্ট পোকা আক্রমণ করে। পোকা যেন ক্ষতি করতে না পারে, তাই আগাম প্রস্তুতি হিসেবে কীটনাশক প্রয়োগ করছি। গত মৌসুমে ৩ বিঘা জমি থেকে দেড় লক্ষ টাকার আম বিক্রি করেছিলাম। এবছর আবহাওয়া যদি অনুকূল থাকে, আশা করি গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ লাভ হবে।"

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, "এবছর শুরু থেকেই আবহাওয়া আম চাষের জন্য অনুকূল রয়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর মুকুলের পরিমাণ অনেক বেশি। প্রায় ৯০ শতাংশ গাছেই মুকুল এসেছে। আমের উৎপাদন বজায় রাখতে কৃষকদের জন্য ছত্রাক নাশক এবং পানি স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। মাঠের কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। অবশেষে আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এবছর আমের রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন আশা করা হচ্ছে।"

১৪৫ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন