সর্বশেষ

সারাদেশ

জমি বিক্রির ৩৮ বছর পর বিড়ম্বনায় শতবর্ষী রইচ উদ্দিন

এম এস রহমান, পাবনা
এম এস রহমান, পাবনা

রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫ ১:২০ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
রইচ উদ্দিন ও সন্তেষ প্রামানিক দীর্ঘ ২৭ শতক ফসলি জমি বিক্রি করেন ৬৬৩ নম্বর দাগে, যেখানে ক্রেতা আফসার শেখের পরিবারও সেই জমির দখলকারি ছিল।

কিন্তু ৩৮ বছর পর খাজনা খারিজ করতে গিয়ে এই জমির দাগ নম্বর ভুলবশত ৬৭৭ নম্বর হিসেবে দলিলে উল্লেখিত হয়, যা রইচ উদ্দিনের বাড়ির জমি। বর্তমানে ক্রেতার উত্তরসূরীরা জমির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় ওই ৬৭৭ নম্বর দাগে জমির দাবি করছেন।

রইচ উদ্দিন আত্নরক্ষার জন্য আদালতে মামলা দায়ের করেন এবং দলিলের সংশোধন করে ডিগ্রি লাভ করেন। তবে, ক্রেতাদের পক্ষ থেকে ওই ডিগ্রির বিরুদ্ধে মামলা করা হয় এবং বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন রইচ উদ্দিন ও তার ছেলে আশরাফুল ইসলাম।

রইচ উদ্দিনের বয়স এখন শতবর্ষী। তিনি পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের জবেরপুর গ্রামে বাস করেন। তাঁর ছেলে আশরাফুল ইসলাম একটি হতদরিদ্র রঙের মিস্ত্রি। অভিযুক্তরা হলেন, একই গ্রামের বাসিন্দা আমির হোসেন, আব্দুল আলিম ও মনিরুল ইসলাম—যারা আফসার শেখের নাতি।

জমির দলিল অনুযায়ী, রইচ উদ্দিন ও সন্তেষ শেখ ১২ জানুয়ারি ১৯৭৬ সালে উথুলী মৌজার ৬৬৩ নম্বর দাগের ২৭ শতক জমি আফসার শেখ ও আছিয়া বেগমের কাছে বিক্রি করেন। কিন্তু তৎকালীন দলিল লেখকের ভুল কারণে জমির দাগ নম্বর ৬৭৭ উল্লেখ হয়। ৩৮ বছর ধরে জমিটি ভোগদখল করার পর, ২০১৪ সালে খাজনা খারিজ করতে গিয়ে বিভ্রান্তির বিষয়টি উদ্বোধন হয়।

রইচ উদ্দিনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম বলেন, “বোঝাতে চেষ্টা করেছিলাম যে দলিলে দাগ নম্বর ভুল রয়েছে। কিন্তু তারা শুনতে চাননি।” এরপর, তারা ২০১৪ সালে আদালতে মামলা করেন এবং ২০২৯ সালে আদালত তাদের পক্ষেই রায় দেন যে দলিলে সংশোধন হওয়া প্রয়োজন।

এ সভাবতে, তারা এসিল্যান্ড অফিসে গিয়েও প্রয়োজনীয় সাহায্য পাননি। শুনানীর পর অ্যাসিল্যান্ড জানিয়ে দেন যে বিবাদীপক্ষ আদালতে আপীল করেছেন। আশরাফুল আরও জানান, অভিযুক্তরা শালিসিতে আসেননি এবং তারা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেছেন।

রইচ উদ্দিন বলেন, “আমি ৬৬৩ নম্বর দাগে জমি বিক্রি করেছি। তারা ৩৮ বছর ধরে দখল করেছে কিন্তু এখন আমার বাড়ির জমির জন্য দাবি তুলছে। এতকিছুর পরও কি আমি ন্যায়বিচার পাবো?”

অভিযুক্ত আমির হোসেন বলেন, “তারা জমি জালিয়াতি করে নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করবো।”

এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদি হাসান শাকিল বলেন, “কেউ যদি অসন্তুষ্ট হন, তাহলে তারা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর কাছে আপীল করতে পারেন এবং সেই মতে আমাদের প্রমাণাদি সরবরাহ করবো।”

সুতরাং, এই সংঘাতের মীমাংসার জন্য রইচ উদ্দিন ও তার পরিবারের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে আদালতের ন্যায়বিচারের প্রতীক্ষায়।

১২৪ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন