সাতক্ষীরায় অপরিকল্পিতভাবে নদ খনন, ভেঙে পড়েছে ৫টি সেতু

শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫ ৫:২২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
সাতক্ষীরায় অপরিকল্পিত মরিচ্চাপ নদী খননের ফলে পানির ওপর নির্মিত পাঁচটি সেতু ভেঙে গেছে।
এই কারণে সাতক্ষীরা সদর, দেবহাটা ও আশাশুনি উপজেলার বাসিন্দাদের প্রতি যাতায়াতে তিন থেকে পাঁচ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হচ্ছে। এছাড়া, যারা নৌকায় পারাপার হচ্ছেন, তাদেরও দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ জানিয়েছেন, জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য একটি কাঠের সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। সাতক্ষীরা ও আশাশুনি উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মরিচ্চাপ নদী আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর সঙ্গে মিশেছে এবং এর দৈর্ঘ্য ৩০ কিলোমিটার। ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সদর থেকে আশাশুনির শোভনালি পর্যন্ত মোট নয়টি সেতু নির্মাণ করা হয়।
যদিও দুই বছর আগে নদী খননের কারণে পাঁচটি সেতু ভেঙে পড়েছে, তারপর থেকে নতুন করে আর কোনো সেতু নির্মাণ হয়নি। এর ফলে সাতক্ষীরা সদর, আশাশুনি ও দেবহাটা এলাকার দুই লাখাধিক মানুষ পরিবহন ও ব্যবসায় চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, তাদের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে হচ্ছে।
শিক্ষার্থী মরিয়াম খাতুন, তানিয়া, জুঁই এবং শ্রিপরা পাল বলেছেন, তাদের প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে হয় এবং জোয়ারের সময় অনেক সময় ভিজে যায়। পারাপারের সময় অনেকেই দুর্ঘটনাবশত নদীতে পড়ে আহত হচ্ছেন। তারা দ্রুত সেতু নির্মানের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
বুধহাটা ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য মমতাজ বেগম বলেন, "শোভনালি ইউনিয়নের মরিচ্চাপ নদীর ওপর নির্মিত বাঁকড়া ও কামালকাটির সেতু ভেঙে নদীতে পড়ে রয়েছে।" তিনি আরও বলেন, "বাঁকড়া সেতুর দুই দিকে বাঁশের পাটাতন ও মাঝখানে বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে জনগণ ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছে। এই সাঁকোর ওপর দিয়ে পার হওয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে দুর্ঘটনার শিকার হওয়া ঘটনা ঘটছে। দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণের আহ্বান জানাই।"
সাতক্ষীরার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান জানান, "এগুলো আমাদের অধীনে নয়, সেতুগুলি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নির্মিত। যাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে আমরা নতুন সেতু নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছি।"
জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেছেন, "মরিচ্চাপ নদীর ওপর নির্মিত সেতুর ভেঙে যাওয়ার ফলে শিক্ষার্থীসহ জনগণের চলাচলে ঝুঁকি দেখা দেওয়ার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে সেতু নির্মাণের জন্য আলোচনা করা হয়েছে এবং দ্রুত কাঠের সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।"
১৪০ বার পড়া হয়েছে