নিউটনের ভবিষ্যদ্বাণী: ২০৬০ সালে পৃথিবীর ধ্বংস?

রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ৫:৫৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটনের (১৬৪৩-১৭১৭) নাম বিজ্ঞান ও গণিতের ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে আছে। মাধ্যাকর্ষণ সূত্র এবং গতির ধারণা প্রদানের জন্য তিনি সুপরিচিত। তবে অনেকের হয়তো অজানা, নিউটন শুধু বিজ্ঞানীই ছিলেন না, বাইবেলের একজন গভীর বিশ্লেষকও ছিলেন তিনি।
১৭০৪ সালে লেখা এক চিঠিতে নিউটন পৃথিবীর ধ্বংস সম্পর্কিত একটি ভবিষ্যদ্বাণী করেন, যা আজও মানুষের মনে কৌতূহল জাগায়। তিনি বাইবেলের বিভিন্ন ঘটনার বিশ্লেষণ করে এবং কিছু গাণিতিক হিসাবের মাধ্যমে ২০৬০ সালকে পৃথিবীর ধ্বংসের সম্ভাব্য সময় হিসেবে উল্লেখ করেন।
এই ভবিষ্যদ্বাণী তৈরি করতে নিউটন বাইবেলের 'বুক অফ ড্যানিয়েল' ও 'রেভেলেশনস'-এর বিভিন্ন ঘটনার সময়কালকে ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করেন। তিনি ১২৬০, ১২৯০, ১৩৩৫ এবং ২৩০০ দিনের উল্লেখ করেন, যা বাইবেলের এই দুটি অংশে পাওয়া যায়। এই দিনগুলোকে তিনি বছর হিসেবে ধরে হিসাব করেন এবং এর মাধ্যমেই ২০৬০ সাল নাগাদ পৃথিবীর ধ্বংসের একটি ধারণা দেন।
তবে, নিউটনের এই ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে বিতর্কও রয়েছে। কানাডার হ্যালিফ্যাক্সের কিংস কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্টিফেন ডি স্নোবেলেনের মতে, নিউটনের গণনায় ক্যালকুলাসের মতো জটিল কোনো বিষয় ছিল না, বরং প্রাথমিক গণিত ব্যবহার করা হয়েছে।
এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে, নিউটন নিজেই তাঁর এই ভবিষ্যদ্বাণীর চূড়ান্ত সত্যতা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'শেষের সময় কখন হবে তা নিশ্চিত করার জন্য আমি এমনটা উল্লেখ করছি না।' তাঁর মতে, ঘন ঘন ধ্বংসের ভবিষ্যদ্বাণী করা হলে তা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে এবং বাইবেলের প্রতি মানুষের সম্মান কমে যেতে পারে।
অধ্যাপক স্নোবেলেনের মতে, নিউটনকে শুধু আধুনিক অর্থে বিজ্ঞানী হিসেবে দেখা যায় না। তিনি ছিলেন একজন প্রাকৃতিক দার্শনিক। সেই সময় প্রকৃতি এবং ঈশ্বরের উপস্থিতি—উভয়ই দর্শনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। নিউটনের জন্য ধর্ম ও বিজ্ঞান ছিল একই সূত্রে গাঁথা। তিনি তাঁর সারা জীবন প্রকৃতি এবং ধর্মগ্রন্থের সত্য অনুসন্ধানে উৎসর্গ করেছিলেন।
১৩৫ বার পড়া হয়েছে