হামলা ও অগ্নিসংযোগ: ৩৫ জেলায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতি

শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ৭:০০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকালও আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ও অফিসে হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীরা স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদবিরোধী স্লোগান দিয়ে হাতুড়ি ও শাবল ব্যবহার করে ভাঙচুর চালিয়েছে এবং আগুন দিয়েছে।
ঘটনাস্থলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ভাস্কর্য, ম্যুরাল এবং নামফলক ভাঙচুরেরও অভিযোগ রয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহসহ অন্তত ৩৫ জেলায় এই ধরনের হামলার খবর পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে ছাত্র-জনতা। সমর্থকরা স্থানীয়ভাবে এটি ভেঙে ফেলার কাজ চালায় এবং ভবনের আসবাবপত্র লুটে নেওয়ারও ঘটনা ঘটেছে। একই রাতে শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনেও আগুন দেওয়া হয়, যেখানে ফায়ার সার্ভিস নিরাপত্তাহীনতার কারণে উপস্থিত হতে পারেনি।
নোয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, বরিশাল এবং রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানে হামলার শিকার হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। জামালপুরের অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনের বাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে হামলার ঘটনায় এক বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকার এ অবস্থাকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে উল্লেখ করেছে। সরকারের মতে, শেখ হাসিনার মন্তব্যের ফলে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ফলে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে একটি প্রতিবাদপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) দেশের বিভিন্ন স্থানে এই ধরনের ভাঙচুরের ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী সাংবাদিকদের জানান, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে গেছেন। তবে সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য প্রদান করতে পারেননি।
বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটেছে বিশৃঙ্খলা। বিশেষ করে ধানমন্ডির ঘটনার পর এর প্রভাব অন্যান্য জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ বিভিন্ন স্থানে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছেন, যেখানে তারা শেখ মুজিবের অংশীদারিত্ব এবং সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রতি নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এছাড়া, যশোর, সুনামগঞ্জ, রংপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে ভাস্কর্য ও নামফলক ভাঙচুরের শিকার হয়েছে। মালপত্র নিয়ে যাওয়া ব্যবসায়ীরাও পরিস্থিতির অবনতির কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এই ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাগিদ দিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সহিংসতার বিচার এবং ন্যায় বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা জরুরি বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে।
১৬৫ বার পড়া হয়েছে