সর্বশেষ

জাতীয়

জুনে গণপরিষদ নির্বাচনসহ ১১ দফা ঘোষণা বিপ্লবী পরিষদের

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

বুধবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ৩:০২ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
জুলাই বিপ্লবের জন-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে আগামী জুনে গণপরিষদ নির্বাচন ও ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি করে বিপ্লবী সরকার গঠনসহ ১১ দফা দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের রাজনৈতিক প্রধান আনিছুর রহমান এ ডাক দেন।

এ সময় জুলাইয়ের শহিদ জাবির ইব্রাহিমের বাবা কবির হোসেন, শহিদ নাইমা সুলতানার মা আইনুন নাহার ও শহিদ রানা তালুকদারের মা রুবি বেগম জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আন্দোলনকে সমর্থন জানান।

সংবাদ সম্মেলনে গণপরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপিকে গভীরভাবে ভাবার আহ্বান জানান আনিছুর রহমান।


তিনি বলেন, দেশে দীর্ঘদিন নির্বাচিত সরকার না থাকলে বিদেশি শক্তি ও পতিত ফ্যাসিবাদ নানা ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পাবে। এমনকি বন্ধু দেশগুলোও লবিস্টদের দৌরাত্ম্যের কারণে ভুল পদক্ষেপের খপ্পরে পড়তে পারে। আবার গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ছাড়া দ্রুত নির্বাচন দিলে অশুভ শক্তি পতিত ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসন করে বসতে পারে।

এ অবস্থায় গণপরিষদ নির্বাচন হলো একমাত্র বিকল্প যার মাধ্যমে দ্রুত সময়ে দেশ একটি নির্বাচিত কর্তৃপক্ষ পাবে। এর ফলে গণপরিষদের সম্ভাব্য বড় দল বিএনপির ক্ষমতা বিষয়ক আতঙ্ক দূর হবে। পাশাপাশি দলটি সংবিধান প্রণয়নের দায়িত্ব পেয়ে কেমন সংস্কার করে, ভিন্নমত কতটা শোনে এবং জনগণের কতটা অধিকার দিতে রাজি হয় তাও জাতীয় নির্বাচনের আগে স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে জানান জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের রাজনৈতিক প্রধান।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সাংগঠনিক প্রধান মো. শফিউর রহমান, সদস্য সচিব মোহাম্মদ হাসান আরিফ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক রাবেয়া আক্তার ও আব্দুল আহাদ নূর, সহকারী সদস্য সচিব আবদুস সালাম, ইঞ্জিনিয়ার ইমামুল হক, গালীব ইহসান, সৌরভ শাকিল, ডা. মাসুম বিল্লাহ, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, সদস্য সচিব মুহিব মুশফিক খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মো. মেহেদি হাসান মাহি ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ ইসতেকার ইসলাম অর্ণব এবং বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব ফরহাদ আহমেদ প্রমুখ।

১১ দফা দাবি

১. বিচার: জুলাই গণহত্যা, শাপলা চত্বর, পিলখানা হত্যাকাণ্ড এবং বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের হত্যার বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং জড়িতদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা। জড়িতদের দেশ-বিদেশ থেকে বন্দি করে আনার জন্য বিশেষ বাহিনী গঠন। ‘ফ্যাসিস্ট’ রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বাতিলকরণ। ছয় মাসের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা।

২. ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন: শহিদ পরিবারের সদস্যদের ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের পুনর্বাসন ও চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করা।

৩. গণপরিষদ নির্বাচন: জুন ২০২৫-এ গণপরিষদ নির্বাচন। গণপরিষদে শহিদ পরিবারের সদস্য, ছাত্র, নাগরিক ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্তি।

৪. বর্তমান ব্যবস্থা বাতিল: গণপরিষদ কর্তৃক ’৭২ এর সংবিধান বাতিল, রাষ্ট্রপতি অপসারণ এবং উপদেষ্টা সরকার ভেঙে দেওয়া।

৫. বিপ্লবী সরকার গঠন: ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতি শাসিত বিপ্লবী সরকার গঠন। এ সরকারের একটি অন্তর্বর্তী মন্ত্রিপরিষদ থাকবে যার নেতৃত্ব দেবেন গণপরিষদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী।

৬. নতুন সংবিধান ও নির্বাচন: জানুয়ারি ২০২৬ এর মধ্যে নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং তিন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন।

৭. জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ: ড. ইউনূসকে চেয়ারম্যান এবং সেনাপ্রধানকে ভাইস-চেয়ারম্যান করে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ গঠন। এ পরিষদ দেশবিরোধী সব চুক্তি পর্যালোচনা করে বাতিল করবে, সব বাহিনীকে পুনর্গঠন করবে এবং পুনর্গঠনকালীন সময়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও সামাজিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করবে।

৮. জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ: ব্যবসায়ীদের নেতৃত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ গঠন করে অর্থনীতি সচল ও সংস্কার, কালো টাকা উদ্ধার ও সিন্ডিকেট ভাঙা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য জনগণের আয়ত্তের মধ্যে রাখা।

৯. শিক্ষা সংস্কার: আধুনিক, উন্নত মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার উপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে শিক্ষা কমিশন গঠন। শিক্ষকতাকে প্রথম শ্রেণির পেশা ঘোষণা করে শিক্ষকদের সর্বোচ্চ বেতন প্রদান। মাস্টার্স পর্যন্ত শিক্ষা বিনামূল্যে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য সুদমুক্ত শিক্ষা ঋণ চালু। সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সারাদেশে উন্নত আবাসন ব্যবস্থা চালু।

১০. স্বাস্থ্যসেবা: সব গরিব ও মেহনতি মানুষের চিকিৎসা খরচ রাষ্ট্র বহন করবে। সব নাগরিকের জন্য ব্যয়বহুল জটিল রোগের চিকিৎসা বিনামূল্যে হতে হবে। চিকিৎসা ব্যবস্থা আধুনিকায়নের লক্ষ্যে সব বিভাগে একাধিক বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

১১. শ্রমিক কল্যাণ: ঘণ্টা প্রতি সার্বজনীন মজুরি ঘোষণা করতে হবে। বিনা সুদে কর্মসংস্থান ঋণ প্রদাদের পাশাপাশি শ্রমজীবীদের জন্য আবাসন ও সন্তানদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে।

গণপরিষদ নির্বাচন
বিপ্লবী পরিষদ

১৩১ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন