সর্বশেষ

জাতীয়

ডেসকো'র সেই 'লম্পট শরীফ' হতে চায় ওজোপাডিকো'র এমডি!

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা

বৃহস্পতিবার , ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১:০৬ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড ডেসকো'র পঞ্চপাণ্ডবের এক পাণ্ডব চীফ ইঞ্জিনিয়ার শরিফুল ইসলাম। যিনি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে সম্প্রতি কোম্পানির পদ নিয়ে হয়েছেন নির্বাহী পরিচালক (অপারেশন) অতিরিক্ত দায়িত্ব।

যার বিরুদ্ধে আছে চাঞ্চল্যকর লাম্পট্যের গুরুতর অভিযোগ। এক নারীর এই অভিযোগ নিয়ে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে তোলপাড়। কারণ তার অভিযোগে উঠে এসেছে প্রতিদিন নতুন নারী নিয়ে শরিফের আমোদ ঘরের খবরাখবর। পতিত স্বৈরাচারের দোসর। তার মেয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য পড়ালেখা করছে আমেরিকায় আর ছেলে পড়ে কানাডায়। আয়ের সঙ্গে ব্যায়ের সঙ্গতিহীন শরিফের রয়েছে অভিজাত বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিজাত নিজস্ব ফ্ল্যাট। এছাড়া মিরপুরে ৬ নং সেকশনে আরেকটি ফ্ল্যাটসহ রাজধানী জুড়ে ১০টির উপরে বাড়িগাড়ি বিপুল ধনসম্পদ।

এদিকে, পতিত স্বৈরাচারের দোসর এই শরিফই ওজোপাডিকো'র নতুন এমডি হতে শুরু করেছেন দৌড়-ঝাপ। সেইসঙ্গে নিজেকে দিচ্ছেন বিএনপি সংশ্লিষ্টতার পরিচয়। এসব তথ্য অনুসন্ধানে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানের নিকেতন, দক্ষিণখান এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবপুর তার গ্রামে আমাদের টিম কাজ করছে।

শুরুতেই তুলে ধরবো, চীফ ইঞ্জিনিয়ার শরিফের যৌন লালসার শিকার ফাহমিদা আক্তার ২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বরাবর অভিযোগ কি লিখেছিলেন। তিনি বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেন, ডেসকোর চীফ ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শরিফ কর্তৃক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘ এক বছর সম্পর্ক করে এখন বিয়ে না করায় ধর্ষনের বিচার চাওয়া প্রসঙ্গে।

এরপর শুরু করেন এভাবে, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী ফাহমিনা আক্তার। আমি আগে এটি প্রাইভেট জব করতাম। প্রায় দুই বছর আগে একটি ক্লাবে ডেসকো'র চীফ ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন ও শরিফের সাথে আমার পরিচয় হয়। সেই থেকেই ফোনে কথা বলা তারপর ভালোলাগা। তখন একদিন মহিউদ্দিন আমাকে একটি হোটেলে ডেকে বলেন, মহিউদ্দিনের আমাকে ভালো লেগেছে। সে বলে তার ছেলে, মেয়ে, বউ সবাই কানাডার সিটিজেন। তাদের আর দেশে আসার সম্ভাবনা কম এবং মহিউদ্দিনের নিজেরও কানাডার সিটিজেনশীপ আছে। কিন্তু তিনি দেশেই থাকবেন। মহিউদ্দিন তখন আরো বলেন, সময় সুযোগ মত তিনি (মহিউদ্দিন) আমাকে বিয়ে করবেন এবং এখন থেকে আমার সকল খরচ মহিউদ্দিনই চালাবেন। মহিউদ্দিনের এই আশ্বাসে তখন আমি প্রাইভেট জব ছেড়ে দেই। তখন প্রায়ই গুলশান নিকেতনের একটি ভাড়া বাসায় আমরা প্রায়ই রাত কাটাতাম। এইভাবে গুলশান নিকেতনে আমরা প্রায় এক বছর ছিলাম।

পরে নিকেতনে নারীঘটিত একটা ঝামেলা হওয়ার পর মহিউদ্দিন দক্ষিন খান এলাকায় একটি বাসা ভাড়া করে। সেই ভাড়া বাসায় মহিউদ্দিন আমাকে রাখে এবং বলে ছয় মাসের মধ্যে সে আমাকে বিয়ে করবে। দক্ষিনখান বাসায় মহিউদ্দিন প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার আসতো। মহিউদ্দিনের দুই বন্ধু জকির ও চীফ ইঞ্জিনিয়ার শরিফও প্রায়ই নতুন নতুন মেয়ে নিয়ে আমাদের পাশের রুমে সময় কাটাতো। জাকির খুব কম আসতো তবে শরিফ প্রায়ই আসতো দুপুরের দিকে নতুন মেয়ে নিয়ে। পরে জানতে পারলাম জাকির ও শরিফ উনারাও মহিউদ্দিনের সাথে ডেসকো'র ইঞ্জিনিয়ার। দক্ষিণখানে বাসা নেওয়া হয়েছে প্রায় এক বছর হলো। কিন্তু মহিউদ্দিন এখনও আমাকে বিয়ে করছে না। শরিফও কয়েকটি মেয়েকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে দীর্ঘদিন শারীরিকভাবে মেলামেশা করে পরে আর বিয়ে করে নাই।

গত ১৫/০৯/২০২০ ইং তারিখ (মঙ্গলবার) মহিউদ্দিন, জাকির, শরিফ দক্ষিনখান বাসায় আসে, সাথে শরিফ একটি নতুন মেয়ে নিয়ে আসলে দক্ষিনখান বাসার আশেপাশের লোকজন তাদেরকে অপমান-অপদস্ত করে। সেই ঘটনার পর হতে আমাকে বিয়ে করার পরিবর্তে উল্টো মহিউদ্দিন ও শরিফ আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।

মহোদয়, তাই আমি গত ১৬/০৯/২০২০ইং তারিখ (বুধবার) আমার সমস্ত ঘটনা ডেসকো'র এমডি স্যারের রুমে আমি স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে এমডি এবং আরো চারজন নির্বাহী পরিচালকের সামনে উপরিউল্লেখিত ঘটনাসহ সকল ঘটনা খুলে বলি এবং উপস্থিত এমডি ও ডাইরেক্ট বিষয়টি দেখবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করে বিদায় করেন। তাই আমি আপনার নিকট সুবিচার প্রার্থনা করছি।

ফাহমিদা আক্তার এই অভিযোগে অনুলিপি পাঠান বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয় ও ডেকো'র সকল দপ্তর/বিভাগ এবং অফিসে।

এদিকে, টাকা ছিটিয়ে সকল অপকর্ম তারা চাপা দেন। তবে যৌন নিপীড়নের শিকার নারীরা বসে থাকেননি। বিভিন্নভাবে বিষয়গুলো তুলে ধরতে থাকেন। এরই মধ্যে দুই নারী ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন কিভাবে রাজধানীর অভিজাত নিকেতন এবং দক্ষিণখানে নারীদের রেখে ফূর্তি করতেন চীফ ইঞ্জিনিয়ার শরিফসহ তার সহযোগীরা। এই চক্র শুধু টাকার বিনিময়েই নয়, প্রলোভন এবং প্রতারণার মাধ্যমে নারীদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হয়েছেন। যা ভুক্তভুগী নারী এবং নিকেতনের বাসার দারোয়ান, ম্যানেজার এবং দক্ষিণখানের বাসার তত্ত্বাবধায়ক এবং আশপাশের লোকজন বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন।

ডেসকো'র চীফ ইঞ্জিনিয়ার শরিফ নিজেকে বিএনপির সমর্থক এবং পারিবারিকভাবে জড়িত বলে দাবি করে আসছেন। তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আমাদের টিম অনুসন্ধান করেছেন। কিন্তু তার কথার সত্যতা পাওয়া যায়নি। কথা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক তবিউল ইসলাম তারিফের সঙ্গে। তিনি জানালেন, ডেসকো'র কথিত চীফ ইঞ্জিনিয়ার প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বিএনপির কেউ নন। তিনি দলের নাম ভাঙ্গানো পতিত স্বৈরাচারের দোসর।

ঘটনাগুলো জানতে চীফ ইঞ্জিনিয়ার শরিফের সঙ্গে কথা বলতেই দম্ভ দেখাতে শুরু করেন। সাংবাদিকতার নীতির প্রসঙ্গ টানেন। লিখিত দরখাস্ত করতে বলেন। তিনি কোনো তথ্য দিতে বাধ্য নয়। কোনো কথা বলবেন না, সাফ জানিয়ে দেন। একইসঙ্গে নানা হুমকিও দেন। এক পর্যায়ে ফোন কল কেটে দেন। এরপর অন্য অসৎ সাংবাদিকদের কাছে জানান চাঁপাইনবাবগঞ্জ যুবদল নেতার মাধ্যমে সাংবাদিকদের ম্যানেজ করেছেন।


(চোখ রাখুন: পরবর্তী পর্বে থাকছে অভিজাত এলাকা গুলশান নিকতন এবং দক্ষিণখানে ফূর্তির বিস্তারিত)

৭১৬ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(1)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন